আশ্রয়ণ প্রকল্প: টিনের ঘরের চাল দিয়ে আকাশ দেখা যায়




বৃষ্টির মধ্যে কি রাত কি দিন পলিথিনের কাগজ মোড়ায় দিয়া খেতা-কাপর টোপলা বাইন্দা নিয়া বইয়া থাকি

 


আশ্রয়ণ প্রকল্প: টিনের ঘরের চাল দিয়ে আকাশ দেখা যায়

 

 

 

Global New News Desk   -  

সানবান্দা আশ্রয়ণে ছবি তুলতে গেলে তেরে আসেন মর্জিনা বেগম (৪০) নামে একজন বাসিন্দা। বাঁধা দেন ছবি তুলতে। পরিচয় জানার পর ক্ষোভ নিয়ে বলতে থাকেন- মেলা মানুষ আহে এইহানে, ফটো তুলে, যাওয়ার বেলা কইয়া যায় কাম আইবো, আমাগো ঘরের কিছুই অয়না।

 

 

ঘরে কারেন্ট নাই, আমাগো সোলার দিছাল, তাও নষ্ট হইয়া গেছে। আইতে অন্ধকারে থাহন লাগে। আশ্রয়ণটির বয়স প্রায় ১৭ বছর। মোট ঘর রয়েছে ৬০ টি। এমন দশায় অনেকই চলে গেছেন। যাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই তাদের মতো এখনো বাস ২৬ টি পরিবারের।

 

 

 

উপজেলার পুরাতন চারটি আশ্রয়ণ প্রকল্প হল-পাঁচটিকড়ী, দেওপাড়া, কাজলা ও লক্ষিন্দর ইউনিয়নের সানবান্দা আশ্রয়ণ প্রকল্প। নির্মাণের পর অধ্যবধি পর্যন্ত কোনো সংস্কার কাজ হয়নি। এদের মধ্যে একেবারেই বসবাসের অনোপযোগী হয়ে পড়েছে সানবান্দা আশ্রয়ণ ।

 

 

 

টিনের ঘরের চালা দিয়ে আকাশ দেখা যায়। বড় বড় ফুটায় ব্যবহার করা হয়েছে ছেঁড়া কাঁথা ও পলিথিন। মানে টিনের চালার ওপর কাঁথা ও পলিথিনের ছাউনি। মরিচা পড়ে টিন আর আস্ত নেই। সামান্য বৃষ্টিতে উঠান ভেজার আগেই ঘর ভিজে যায়। ঘর নির্মাণের পর আর মেরাতম করা হয়নি। এমন বেহাল দশা টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার চারটি পুরাতন আশ্রয়ণ প্রকল্পের। কর্তৃপক্ষ বলছে বছর দুয়েক আগে মেরামত-সংস্কারের জন্য প্রকল্প প্রস্তুত করে ওপরে পাঠানো হয়েছে।

 

 

আশ্রয়ণের বাসিন্দা বৃদ্ধা খোদেজা জানান, বৃষ্টির মধ্যে কি রাত কি দিন পলিথিনের কাগজ মোড়ায় দিয়া খেতা-কাপর টোপলা বাইন্দা নিয়া বইয়া থাকি। বয়সের ভাড়ে কঁজো হয়ে যাওয়া নূরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির দিনে উঠানে ভিজার আগেই ঘর ভিজা যায়। চালে পলিথিন আর খেতা দিয়া পানি ফিরাবার চেষ্টা করি তাও ভিজা যায়।

 

 

 

 

লক্ষিন্দর ইউনিয়নের সানবান্দা এলাকার ইউপি সদস্য বাহদুর মিয়া জানান, শুধু ঘর দিয়েই পানি পড়ে না, তাদের ট্রয়লেট নাই, সোলার প্রায় সবগুলো নষ্ট, টিউবওয়েলও নাই। অন্য জায়গা থেকে পানি এনে পান করতে হয়। উপজেলায় বিষয়টি জানানো হয়েছে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় একই অবস্থা উপজেলা আরও তিনটি পুরাতন আশ্রয়ণ প্রকল্পের।

 

 

এদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর চারটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের মেরামত-সংস্কার নিমিত্ত এলজিইডি কর্তৃক প্রকল্প প্রস্তুত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ওপরে পাঠানো হয়েছে। সেখানে মেরামত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৭৫ লাখ ৬২ হাজার টাকা।

 

 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন করে সংস্কারের জন্য প্রকল্প প্রস্তুত করে প্রায় দুই বছর আগে প্রকল্প পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। এটি পাস হয়ে আসলে সংস্কার করা হবে।

 

 

ইউএনও মো.সোহাগ হোসেন বলেন, আমি উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি, আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো পরিদর্শন কবর এবং স্থানীয়ভাবে যেগুলোর সমধান করা সম্ভব তা করা হবে। আগের নথিগুলো দেখে এ বিষয়ে ওপরে কথা বলব। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ