ঈদে জোটেনি কোরবানির মাংসসহ কোনো সাহায্য

 


‘টিএনও স্যার কইছাল দিব, তার আগেই হে চইলা গেছে .......

 

 

 

 

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন

ঈদে জোটেনি কোরবানির মাংসসহ কোনো সাহায্য

 

 

 

ঘাটাইলে আশ্রায়ণের বাসিন্দাদের ভাগ্যে জোটেনি এক টুকরা মাংস

 

Global New News Desk -

 

করোনার এই সময় টানা লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া আশ্রয় কেন্দ্রের অসহায় মানুষগুলো যাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন এই ঈদে তাদের দেখা মেলেনি। কোরবানির মাংস তো দূরে থাক; জনপ্রতিনিধি, ব্যক্তি এমনকি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তাদের ঘরে পৌঁছায়নি এক প্যাকেট সেমাই, চিনি ও দুধ।

 

 

উপজেলায় ২৭৬ টি পরিবার ঘর পেয়েছেন। কেমন কাটল তাদের ঈদ, এনিয়ে কথা হয় তাদের সঙ্গে। হাজেরা বেগমের (৬০) স্বামী কত বছর আগে মারা গেছেন তা ঠিক করে বলতে পারেন না। এক মেয়ে ছিল, বিয়ে দিয়েছেন। একার সংসার, চলে ভিক্ষা করে। অসুস্থ। তিনি ঘর পেয়েছেন দিগড় ইউনিয়নের কদমতলী এলাকায়।

 

 

ঈদের আগে কোনো সাহায্য সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘টিএনও স্যার কইছাল দিবু, তার আগেই হে চইলা গেছে (পদন্নোতি জনিত বদলি)। হে থাকলে দিত।

 

 

সন্ধানপুর ইউনিয়নের সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা আসাদ (৪৭)। মাংস কিনে খাওয়ার মতো সামর্থ্য তার নেই। তাই স্ত্রী সন্তান নিয়ে চেয়ে থাকেন কোরবানির ঈদের দিকে। মাংসের সামাজিক বণ্টনের দিকে।

 

 

সারা বছর একটুকরো মাংস খেতে না পারা ছেলেমেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আগেই চলে যান, যে সমাজে তার

সামাজিক বণ্টনে নাম লেখা আছে সেখানে। জানতে পারেন, এলাকা থেকে চলে যাওয়ায় তার নাম কেটে দিয়েছেন সমাজপতিরা।

 

 

আগের স্থানের সমাজ থেকেও তারা বাদ পড়েছেন  

 

বাবা হয়ে শিশু সন্তানদের মুখে ঈদের মাংস তুলে দিতে পারবেনা, এ দুঃখ খেলা করতে থাকে তার কপালে। বসে

মাথায় হাত দিয়ে ফেলফেল করে তাকিয়ে থাকেন সামাজিক বণ্টনের দিকে। পরে কোনো এক আত্নীয়ের দেয়া কয়েক টুকরো মাংস এনে তুলে দেন সন্তানের মুখে।

 

 

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা অনেকেই আজ আসাদের মতো

সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন। এবার ঈদে তাদের জোটেনি কোরবানির মাংসসহ কোনো সাহায্য।

 

 

 

’ ঈদের দিন বিকেল পর্যন্ত ঘরের কোণে বসেছিলেন জহুরা, সাহায্য হাতে নিয়ে কারো ডাকের আশায়। পরে নাকি

সন্ধ্যায় মেয়ের জামাই এসে তার বাড়ি নিয়ে যান।

 

 

জহুরার ঘরের পাশেই ঘর পেয়েছেন নহর আলী (৭০)। প্যারালাইস্টে আক্রান্ত হয়ে তিনমাস যাবৎ ঘরে পরে

আছেন। বৃদ্ধা স্ত্রী মানুষের বাড়ি কাজ করে স্বামীর মুখে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার তুলে দেন। নহর জানান, আমাগো

এনুকার কেউ কোনো কিছু পায় নাই।

 

 

তবে ঈদের মাংস নাকি খেয়েছেন, তার এলাকা থেকে কে যেন পাঠিয়েছিলেন। বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা নতুন একটি

স্থানে এসে তাদের মধ্যে এখনো গড়ে ওঠেনি সমাজ ব্যবস্থা। আবার আগের স্থানের সমাজ থেকেও তারা বাদ পড়েছেন।

 

 

ঘাটাইলের ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, আশ্রয়ণের বাসিন্দারা আমাদের একটা অংশ। কিন্তু সরকারিভাবে তাদের জন্য এই ঈদে বিশেষ কোনো বরাদ্দ আসেনি। তবে বিষয়টি জানতে পারলাম, পরবর্তীতে যেন এমনটা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ