সিরাজগঞ্জে অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় ৩ সদস্য আটকসহ একটি বাস জব্দ করেছে র‍্যাব-১২





 

সিরাজগঞ্জে র‍্যাবের হাতে বাসসহ অজ্ঞান পার্টির ৩ সদস্য আটক   

 

 

 

Global New News Desk   -  

সিরাজগঞ্জে র‍্যাবের হাতে বাসসহ অজ্ঞান পার্টির ৩ সদস্য আটক । র‍্যাব জানায় , গত ( ১৩ সেপ্টেম্বর ) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে কাচিকাটা হতে রাজদীপ পরিবহনের একটি বাসযোগে ব্যবসায়িক কাজে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা করেন মো. আলমগীর হোসেন ।

 

 

বাস চলাকালীন সময়ে একজন বই বিক্রেতা হকার গাড়ীতে থাকা ১০ থেকে ১২ জন যাত্রীকে প্রথমে বই পড়ার জন্য দেয় এবং বই পড়াকালীন সময়ে বিশেষ কৌশলে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার জন্য বলে কিন্তু আলমগীর হোসেন তা গ্রহণ করেন না। একই সাথে থাকা অন্যান্য বই পড়ুয়া যাত্রীগণ ইসবগুলের ভুষি পানির সাথে গ্রহণ করে।

 

 

 

পরবর্তীতে কিছু সময় অতিবাহিত হলে উক্ত হকার সবাইকে বিশেষ রোগের চিকিৎসার কথা বলে হালুয়া পরিবেশন করে এবং সবাইকে অবগত করে যে এই হালুয়া খেলে তাদের রোগ নিরাময় করা সহজ হবে। হকারের কথায় উৎসাহিত হয়ে বাসের ড্রাইভার ও সুপারভাইজার সহ অন্যান্য যাত্রীগণ খাবার হিসেবে হালুয়া গ্রহণ করে।

 

 

 

সকলের হালুয়া খাওয়া শেষ হলে আলমগীর হোসেন কে হকার হালুয়া খাওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। সে হালুয়া খেতে অসম্মতি প্রকাশ করলে সুপারভাইজার তার দিকে এগিয়ে আসে এবং সুপারভাইজার তাকে হালুয়া খেতে বাধ্য করে। হালুয়া খাওয়ার কিছুক্ষণ পর আলমগীর হোসেন উপলব্ধি করতে পারেন যে তার মাথা ব্যথা হচ্ছে সাথে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিচ্ছে ।

 

 

 

তাই তিনি তাড়াশ থানাধীন মান্নান নগরে গাড়ী থেকে নামার জন্য গাড়ীর গেটে পৌঁছায় কিন্তু গেটে থাকা সুপারভাইজার তাকে গাড়ী থেকে নামতে না দিয়ে জোর করে অন্য একটি সিটে বসিয়ে দেয়। তারপর তিনি অচেতন হয়ে যায়। অচেতন থাকাকালীন সময় ভিকটিমের সঙ্গে থাকা ৩ লক্ষ ২ হাজার টাকাসহ একটি মোবাইল ফোন উক্ত আসামীরা ছিনিয়ে নেয়।

 

 

 

পরবর্তীতে দুপুর দেড়টার দিকে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানাধীন কাচিকাটা বাসস্ট্যান্ডের পাশে স্থানীয় লোকজন তাকে অচেতন অবস্থায় পায় এবং তার বাসায় খবর পাঠাইলে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে তিনি শনিবার ( ১৭ সেপ্টেম্বর ) সকাল ১০ টার দিকে র‌্যাব-১২ সিরাজগঞ্জের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।ভূক্তভোগী নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানার শিকারপাড়া গ্রামের মৃত জাকের হোসেন এর ছেলে ।

 

অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই দিন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-১২ এর স্পেশাল কোম্পানীর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার মিঃ জন রানা এর নেতৃত্বে এই অভিযান চালায় । স্পেশাল কোম্পানী সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা থানাধীন চরিয়া কালিবাড়ি এলাকায় নাটোর হতে ঢাকাগামী মহাসড়কের উত্তর পাশে মো. মুক্তার হোসেন এর মুদির দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর অভিযান চালায় র‌্যাব । এসময় অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় তিন সদস্য  গ্রেফতার করে । তাদের সঙ্গে থাকা একটি যাত্রীবাহী বাস যার রেজি নাম্বার- রাজ মেট্রো-গ ১১-০১৩২, নগদ-২ হাজার ১৩৪ টাকা এবং তিনটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।



 



গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন , নাটোর জেলার বড়াই গ্রাম থানার  জোয়ারী গ্রামের বাবুল কুমার দাস ওরফে আপন দাস এর ছেলে শ্রী সুজন কুমার দাস (২৫) ।এবং একই থানার কালিকাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ পাঠান এর ছেলে মো. বিপ্লব পাঠান (৪৩) । এছাড়া একই থানার দিয়াপাড়া গ্রামের বানু প্রামানিক এর ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (২৮) ।

 

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, এই অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় এই ধরনের নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে বাসে থাকা যাত্রীদের অজ্ঞান করে সর্বস্ব হাতিয়ে নিত।

 

গ্রেফতারকৃত অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করত উদ্ধারকৃত আলামতসহ তাহাদেরকে নাটোর জেলার গুরুদাশপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, জুয়ারি, মাদক ব্যবসায়ী, খুন, এবং অপহরণসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার আসামী গ্রেফতারে র‌্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে।

 

 

 

এ ধরণের অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযান সচল রেখে মাদকমুক্ত সোনার বাংলা গঠনে র‌্যাব-১২ বদ্ধপরিকর।

র‌্যাব-১২ কে তথ্য দিন - মাদক , অস্ত্রধারী ও জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে অংশ নিন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ